সোনালী ব্যাংক পার্সোনাল লোন - সোনালী ব্যাংক হোম লোন

প্রিয় পাঠক আশা করি সবাই ভাল আছেন। আজকে এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা সোনালী ব্যাংক পার্সোনাল লোন সম্পর্কিত বিস্তারিত সকল তথ্য জানতে পারবেন।পাশাপাশি সোনালী ব্যাংক হোম লোন পদ্ধতি সম্পর্কেও বিস্তারিত ধারণা অর্জন করবেন।
সোনালী-ব্যাংক-পার্সোনাল-লোন

আপনি যদি সোনালী ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন অথবা হোম লোন নেওয়ার কথা ভাবছেন তাহলে এই আর্টিকেলটি একবার মনোযোগ সহকারে পড়ে নিন। এই আর্টিকেলটি পড়লে আপনি জানতে পারবেন সোনালী ব্যাংক থেকে লোন নিতে কি কি সব শর্ত রয়েছে এবং কিভাবে লোন পাওয়া যায়।

ভূমিকা

আমরা বিভিন্ন কার্য সম্পাদন করার জন্য ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে থাকি। কিন্তু ব্যাংক থেকে লোন নেওয়া মুখে বলা যতটা সহজ কিন্তু সেই লোনের টাকা পেতে হলে ব্যাংক এর শর্ত, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং কিছু নিয়ম কানুন রয়েছে। তাই এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব সোনালী ব্যাংক পার্সোনাল লোন এবং সোনালী ব্যাংক হোম লোন প্রভৃতি বিষয়বস্তু সম্পর্কে। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।

সোনালী ব্যাংক পার্সোনাল লোন

আপনি আপনার যে কোন প্রয়োজনে সোনালী ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন নিতে পারবেন ৫০ হাজার টাকা থেকে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সৎ নীতি পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের সমস্ত ব্যাংকেই সুদের হার কিছুটা বৃদ্ধি করণ করা হয়েছে।

তবে বাংলাদেশের অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় সোনালী ব্যাংকের লোন ইন্টারেস্ট অনেকটা কম। আর সোনালী ব্যাংক থেকে লোনের জন্য আবেদন করলে লোনের টাকা হাতে পেতে সময় লাগবে ৫ থেকে ৭ কর্ম দিবস।

তবে সোনালী ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন নিতে আপনাকে কিছু নিয়ম মানতে হবে সেটা বাংলাদেশের অন্যান্য ব্যাংক থেকে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।

প্রথমে একটা প্রশ্ন আসতে পারে সেটি হলো আপনি সোনালী ব্যাংক থেকে কোন কোন প্রয়োজনের লোন নিতে পারবেন? আপনার যে কোন ব্যক্তিগত প্রয়োজনে আপনি সোনালী ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন নিতে পারবেন। 

হতে পারে আপনি আপনার ঘরের জন্য আসবাবপত্র ক্রয় করবেন,আপনি ল্যাপটপ ক্রয় করবেন অথবা আপনার যে কোন ব্যাক্তিগত প্রয়োজনে আপনি সোনালী ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন নিতে পারবেন।

সোনালী ব্যাংকের এই পার্সোনাল লোন কারা আবেদন করতে পারবে? সোনালী ব্যাংক থেকে এই পার্সোনাল লোন বেতনভুক্ত ব্যক্তিরা আবেদন করতে পারবে। বেতনভুক্ত ব্যক্তি বলতে আপনি কোন সরকারি চাকরি করেন অথবা আপনি কোন স্বায়ত্ত-শাসিত প্রতিষ্ঠান বা কোন প্রাইভেট কোম্পানি অথবা স্কুল প্রতিষ্ঠানের স্কুলের টিচার হিসেবে কাজ করেন।

সেখানে স্যালারি টা আপনার ব্যাংক একাউন্টে জমা হয় অথবা সোনালী ব্যাংকের একাউন্টে জমা হয়। আপনি যদি এই ক্যাটাগরির মধ্যে পড়েন তাহলে আপনি সোনালী ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন নেওয়ার জন্য আবেদন করতে পারেন। 

তারপর হচ্ছে হচ্ছে পেশাদার শ্রেণী  যারা আছেন ডক্টর,ইঞ্জিনিয়ার বা আর্কিটেক সি কমপ্লিট করা।অর্থাৎ প্রফেশনাল কিছু করে থাকে তারা সোনালী ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন নেওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবে।

তৃতীয়টি হচ্ছে ব্যবসায়ী শ্রেণী। আপনি যদি কোন ব্যবসা করে থাকেন আর সেটা যদি সোনালী ব্যাংকের সাথে ম্যাচ করে তাহলে আপনি সোনালী ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোনটি নিতে পারবেন।

এবার আসি সোনালী ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন নেওয়ার জন্য আপনার কোন কোন যোগ্যতা থাকতে হবে।

১। বয়স

বয়সের প্রসঙ্গে যদি আসা যায় তাহলে মিনিমাম ১৮ বছর হতে হবে

২। জাতীয়তা

অবশ্যই বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে।

৩। মাসিক আয়

মাসিক আয় থাকতে হবে এবং সেটা কত হবে সেটা নির্ভর করবে আপনি যে কোম্পানি অথবা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করবেন তার উপর।

এবার আসি আপনি যদি সোনালী ব্যাংক থেকে লোন নিতে চান তাহলে কত টাকা লোন নিতে পারবেন এবং প্রতিমাসে কত কিস্তি দিতে হবে সেই বিষয়ে।

আপনি কত টাকা লোন নিতে পারবেন তা নির্ভর করবে আপনার নিজ বেতনের উপরে। আপনার প্রতি মাসে যে নেট স্যালারি হবে আপনি সোনালী ব্যাংক থেকে যে পরিমাণ লোন নিতে পারবেন তারই মিডিয়ায় কোনভাবে বেশি হবে না।

সুদের হার যদি হিসাব করা যায় তাহলে সোনালী ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন এর ক্ষেত্রে সুদের হার ১২% হতে পারে, কিন্তু এটি পরিবর্তনযোগ্য। লোনের মেয়াদ যদি হিসাব করা যায় তাহলে লোনের মেয়াদ সর্বনিম্ন ১২ মাস থেকে সর্বোচ্চ পর্যন্ত 36 মাস হতে পারে।

এবার দেখি এই সোনালী ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন নিতে আপনার কি কি ডকুমেন্টস লাগবে। ডকুমেন্টস গুলো হচ্ছেঃ ২ কপি ছবি,NID কার্ডের কপি, বেতন সনদ অথবা পে স্লিপ, একটিভ মোবাইল নাম্বার, চেয়ারম্যান/মেয়র সার্টিফিকেট।

এর পাশাপাশি আপনার দুইজন গ্যারান্টার লাগবে, গ্যারান্টার এর ২ কপি ছবি,গ্যারান্টার এর NID কার্ডের কপি,গ্যারান্টার এর বেতন সনদ অথবা পে স্লিপ লাগবে,গ্যারান্টার এর সচল মোবাইল নম্বর।

এছাড়াও ব্যাংক যদি মনে করে আরো কিছু ডকুমেন্ট লাগবে সে ক্ষেত্রে ব্যাংক আপনাকে বলে দিবে যে আর কি কি ডকুমেন্ট লাগবে।

এই ছিল সোনালী ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন নেওয়ার প্রয়োজনীয় বিষয় সমূহ। আশা করি আপনি আপনার প্রশ্নের উত্তরটি পেয়েছেন। সোনালী ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন নেওয়া সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন।

আপনার পছন্দ হতে পারে এমন আরো পোস্টের তালিকাঃ

সোনালী ব্যাংক হোম লোন

সোনালী ব্যাংক থেকে হোম লোন নিয়ে আপনি অল্প সময়ে  আপনার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন। অন্যান্য ব্যাংকের থেকে সোনালী ব্যাংক হোম লোনের বিষয়ে খুব গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তাই আপনি চাইলে খুব সহজেই হোম লোন পেতে পারেন সোনালী ব্যাংক থেকে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে সোনালী ব্যাংক থেকে হোম লোনের জন্য কারা আবেদন করতে পারবে? যারা আবেদন করতে পারবে তাদের মধ্যে রয়েছেঃ

১। বেতন ভোগী ব্যক্তি

অর্থাৎ আপনি যদি কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে থাকেন সেটা সরকারি বা সরকারি অথবা স্বায়ত্ত-শাসিত যে কোন প্রতিষ্ঠান হতে পারে। এরকম কোন ব্যক্তি হোম লোনের জন্য আবেদন করতে পারবে।

২। ব্যবসায়িক ব্যক্তি

আপনি যদি ব্যবসা করে থাকেন তাহলে সে ক্ষেত্রেও সোনালী ব্যাংক থেকে হোম লোন নিতে পারবেন।সেক্ষেত্রে আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লেনদেনের বিবরণী এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এর দরকার হবে।

৩। বাড়িওয়ালা

অর্থাৎ আপনার যদি বাড়ি থেকে থাকে এবং আপনার আরেক জমি আছে যেখানে আপনি বাড়ি করতে চাচ্ছেন, এক্ষেত্রে আপনি লোন নিতে পারবেন।অথবা আপনার আংশিক বাড়ি করা আছে এবং বাকি বাড়ি কমপ্লিট করার করার জন্য আপনি সোনালী ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন।

৪। প্রবাসী বাঙালি

অনেক প্রবাসী আছে যারা দেশের বাইরে থাকে এবং পরবর্তীতে দেশে এসে বাড়ি করতে চাই। এরাও সোনালী ব্যাংক থেকে হোম লোন নিয়ে বাড়ি করতে পারবে।

চলুন এবার দেখি সোনালী ব্যাংক হোম লোনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো।

আবেদন ফরম

এ আবেদন ফরমে আপনার যাবতীয় ব্যক্তিগত তথ্য এবং আর্থিক তথ্য দিতে হবে। এগুলোর মধ্যে আপনার NID,আপনার পাসপোর্ট সাইজের ছবি, আপনার সচল ফোন নাম্বার,TIN নাম্বার,Return এর কপি দিতে হবে।

আয়ের প্রমাণ পত্র

আপনি যদি স্যালারি পার্সন হয়ে থাকেন তাহলে আপনার স্যালারির সার্টিফিকেট, আপনি যদি বিজনেস করে থাকেন তাহলে বিজনেসের ট্রানজেকশন এর হিস্টরি দিতে হবে।

মালিকানা দলিল

অর্থাৎ আপনার যে জমিটি রয়েছে সে জমির প্রকৃত মালিক যে আপনি এজন্য প্রয়োজনে ডকুমেন্ট দিতে হবে। যেমনঃ হালনাগাদ খাজনার রশিদ,বিএস মিউটেশন খতিয়ান,আর এস খতিয়ান, টাইটেল ডিড সহ অন্যান্য সকল বায়া দলিল, তল্লাশি রশিদ সহ দায়মুক্তির সনদ ইত্যাদি।

পরিবারের সদস্যদের তথ্য

আপনাকে আপনার পরিবারের সদস্যদের তথ্য প্রদান করতে হবে, যা আপনার পরিবারের আর্থিক অবস্থার প্রমাণ করতে সাহায্য করতে পারে।

আবাসনের পরিকল্পনা

আবাসনের পরিকল্পনা বলতে বুঝাচ্ছে আপনার বাড়ির নকশা এবং প্ল্যানের দলিল অর্থাৎ ডেভেলপমেন্ট অথরিটি প্লান, ট্রেস ম্যাপ এবং সয়েল টেস্টের ডকুমেন্টস।

অন্যান্য কাগজপত্র

এছাড়াও ব্যাংক আপনার কাছে অন্যান্য কাগজপত্র প্রয়োজন হলে নিতে পারে।

উল্লেখিত কাগজপত্র জমা দেয়ার পর ব্যাংক আপনার কাগজপত্রগুলো যাচাই-বাছাই করবে সবকিছু ঠিক থাকলে এক পর্যায়ে আপনাকে হোম লোন দিয়ে দিবে।

প্রিয় পাঠক এই ছিল সোনালী ব্যাংক হোম লোন অর্থাৎ সোনালী ব্যাংক থেকে হোম লোন নেওয়ার নিয়ম কানুন

লেখক এর মন্তব্য

প্রিয় বন্ধুরা আশা করি ইতিমধ্যে সোনালী ব্যাংক পার্সোনাল লোন,সোনালী ব্যাংক হোম লোন সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন। সোনালী ব্যাংক থেকে কিভাবে পার্সোনাল নিতে হয়, সোনালী ব্যাংক থেকে কিভাবে হোম লোন নিতে হয়,কি কি সব কাগজ জমা দিতে হয়, কোন সব শর্ত পূরণ করতে হয়, কত বয়স থাকা উচিত ইত্যাদি বিষয়ে  বুঝতে পেরেছেন।

আশা করি আর্টিকেলটি পরে আপনি উপকৃত হয়েছেন। আর যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন এই আর্টিকেলটি পড়ে তাহলে অন্যদের মাঝে শেয়ার করে দিন তারাও যেন এটি পড়ে উপকৃত হয়।

আজ এই পর্যন্তই, আরো সব তথ্য পেতে এই ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url